শামসুল আলম শারেক…টেকনাফের হ্নীলা পানখালী এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ইয়াবা মজুদ রাখার দায়ে বাড়ীর মালিকের ১৫ বছর বয়সী এক মেয়েকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ২ অক্টোবর সকাল ৯ টার দিকে উপজেলার হ্নীলার পুর্ব পানখালী এলাকায় হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির এস আই মাহফুজের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল মৃত ছিদ্দিক আহমদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এ ট্যাবলেট জব্দ করে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,ইয়াবা জব্দের ৩ ঘন্টা আগে অচেনা ৫ বোরকা পরা মহিলা ও ৩ জন পুরুষ মৃত ছিদ্দিক আহমদের বাড়িতে গিয়ে ট্যাবলেটের প্যাকেট গুলো রেখে স্থান ত্যাগ করে। অচেনা লোকগুলো বহিরাগত রোহিঙ্গা ও এরা হ্নীলা পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত ফকির ধর প্রকাশ ফকিরা বাইন্নার পুত্র নির্মল ধরের লোক বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। পক্ষান্তরের,এসময় পানখালী আজম উল্লাহ ফকিরের মসজিদের সামনে রাস্তায় নির্মলকে পায়চারী করতে দেখা গেছে বলে কয়েকজন পথচারী জানিয়েছেন। এই অসময়ে ও ভিন্ন একটি গ্রামে নির্মল ধরের এহেন পদচারণায় সন্দেহের উদ্রেক হলে স্থানীয় কয়েকজন উৎসাহী এলাকা বাসী সাংবাদিকদের অবহিত করে। স্থানীয়রা বলছেন,মৃত ছিদ্দিক আহমদের বাড়ীতে প্রায়শ:অজানা অচেনা কিছু লোকের আনাগোনা হয়। ছিদ্দিক পুত্র নেজামের সাথেই দেখা করে এরা। নেজাম নির্মল ধরের কাপড়ের দোকানের একজন বিশ্বস্ত কর্মচারী। কর্মচারীর সুবাদে অনিচ্ছা থাকা সত্বেও পুত্র নেজামকে কথিত নির্মল ধর সওদাগর অনেক আগে থেকে নেজামকে একাজে ব্যবহার করে আসছে। নেজামের মা উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটের সাথে নির্মল সওদাগর প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে দাবী করেন। আটককৃত ইয়াবার সাথে নির্মলের জড়িত থাকার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এলাকায়। সংশ্লিষ্টদের ধারণা-ছদ্মবেশী কোম্পানী,অসংখ্য অবৈধ ব্যবসার নেপথ্য নায়ক,ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা অভিসার,হ্নীলার মহাজন নামে খ্যাত নির্মলের এহেন স্বেচ্ছাচারি মূলক কর্মকান্ড প্রকাশ পাওয়ায় পুরো উপজেলায় হৈচৈ পড়ে গেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটক কিশোরী সোলতানা পুলিশী জ্ঞিাসাবাদে স্বীকার করে যে, উদ্ধারকৃত ইয়াবা ট্যাবলেটের প্রকৃত মালিক হ্নীলা পুরাতন বাজার পাড়ার প্রয়াত ফকির চন্দ্র ধরের পুত্র নির্মল ধর। সোলতানার পিতার মৃত্যুর পর তার ভাই নিজাম নির্মলের কাপড়ের দোকানে কর্মচারী হিসেবে চাকুরী করে আসছে। সে সুবাধে নির্মল তাদের অজান্তে ঘরের অব্যবহৃত একটি কক্ষে নিজের মত করে মিয়ানমার নাগরিকদের কাছ থেকে ইয়াবা গণনা করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এতে আমরা বাধা দিতে চাইলেও ভাইয়ের চাকুরী হারানোর ভয়ে সহ্য করে যেতাম। প্রতিদিনের মত ২ অক্টোবর সকাল ৬টা হতে নির্মল ধরের উপস্থিতিতে ইয়াবা গননা করাকালে সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ মোবাইলফোনে পুলিশ আসছে শুনে তার সাথে থাকা আরো ২ জন মিয়ানমার নাগরিকসহ একটি শপিং ব্যাগ নিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় একটি ইয়াবার পুটলা আমাদের ঘরের সিলিংয়ে (দরদমায়) ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে সেই পুটলা উদ্ধার করে আমাকে আটক করে। এদিকে পানখালী থেকে জব্দকৃত ইয়াবার সংখ্যা নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শোনা গেলেও পুলিশ ইয়াবার সংখ্যা ২ হাজার বলে দাবী করছে। অভিযুক্ত নির্মল ধরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হলে ডলার,স্বর্ণ পাচার ও অবৈধ হুন্ডি ব্যবসাসহ অপরাধ জগতের অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে সচেতন মহল মনে করছেন। এ ব্যাপারে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির টু আই সি মাহফুজ বলেন,নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। জড়িত সন্দেহে আটক কিশোরী সোলতানার স্বীকারোক্তি মতে, অভিযুক্ত নির্মল ধরকে পলাতক আসামী করে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, অভিযুক্ত নির্মল ধর নিজেকে বাঁচাতে বিশাল একটি মোটা অংকের মিশন নিয়ে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
===
সরেজমিনে গিয়ে নেজামের মায়ের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়,
পানখালী গ্রামের মৃত সুলতান হাকিমের বড় পুত্র মৃত ছিদ্দিক আহমদের ৩ ছেলে ৪ মেয়ে। বাবা মারা যাবার পর । ভিত্তিতে অভিযান চালিড় ধরনের ইয়াবার চালানের লেনদেন হচ্ছিল।এবং পলাতক ২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে । এ সময় খবর পেয়ে এসআই মাহফুজের সংগিয় ফোর্স অভিযান চালালে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা টের পেয়ে ইয়াবা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় রেখে যাওয়া প্যাকেটে ২ হাজার ইয়াবা সহ সিদ্দিক আহাম্মদের মেয়ে সোলতানা পারভিন (১৮) কে আটক করে এবং পলাতক দুই জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
Leave a Reply