হাফেজ মুহাম্মদ কাশেমঃ…. ৭ সেপ্টেম্বর শহীদ আলী উল্লাহ আলোর ১ম শাহাদত বার্ষিকী। গত বছরের এই দিনে দেশের সর্ব দক্ষিন সীমান্ত শহর টেকনাফে বর্বরোচিত, হৃদয় বিদারক, জগন্যতম ও দেশ-বিদেশে বহুল আলোচিত টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোঃ আবদুল্লাহর শিশুপুত্র ও টেকনাফ বিজিবি স্কুলের ১ম শ্রেনীর ছাত্র আলোকে ভাড়াটিয়া খুনিরা তার নিজ বাড়ীর কাচারী ঘরে নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করেছিল। দিনটি স্বরনীয় করে রাখতে পিতা মোঃ আবদুল্লাহর নিজ বাড়ীতে বোখারী খতম,মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং আলো শপিং কমপ্লেক্সে আলোচনা সভা ও বায়তুশ শরফ মাদ্রাসা মাঠে এতিমদের খাওয়ানোসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহন করেছেন। নিষ্পাপ শিশু আলী উল্লাহ আলো হত্যাকান্ডটি পৈশাচিক, মর্মান্তিক ও অমানবিক। পিতার পরিবর্তে তাঁর সন্তান হত্যা, অবুঝ শিশুর উপর এমন বর্বরতা খুনিদের এক জগন্যতম আবিষ্কার। এ হত্যাকান্ডটি সাধারন জনগন এখনও মেনে নিতে পারছেনা। অবুঝ শিশুটির উপর এই নির্মমতা কেন? এ প্রশ্নের উত্তর এখনও মিলেনি। কেন খুন করা হয়েছে নিষ্পাপ শিশু আলোকে। এ প্রশ্ন এখনও সবার মুখে মুখে। তবে বিজ্ঞজনদের বলতে শুনা যায়- টেকনাফের গোদারবিলের আলী আহমদ চেয়ারম্যানের(সাবেক) পুত্র আবদুল্লাহ দীর্ঘ্য দিন থেকে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। এছাড়া অঢেল সম্পদের মালিক। তার একটি প্রতিপক্ষ দীর্ঘ্য দিন থেকে পিছু লেগে আছে। সর্বোপরি অর্থ, প্রভাব প্রতিপত্তি নাম ডাকসহ নানান কারনে আবদুল্লাহকে করে দিয়েছে ক্ষমতালোভীদের প্রধান টার্গেট। টেকনাফ বিএনপির একমাত্র ধারক বাহক মোঃ আবদুল্লাহকে রাজনৈতিক ভাবে স্তব্ধ ও রাজনৈতিক মাঠ থেকে চির বিদায় করার জন্য ক্ষমতার দাপট, কালো টাকার প্রভাব ও মাফিয়ারা ভাড়াটি খুনি দিয়ে তাঁর পরিবর্তে নিষ্পাপ শিশু আলী উল্লাহ আলোকে ইতিহাসের জগন্যতম এ হত্যাকান্ডটি করিয়েছে। টেকনাফের আজীবন আধিপত্য ও ক্ষমতালোভীদের ক্ষমতা যাতে অন্যের দখলে চলে না যায় সে চিন্তা করে হত্যাকান্ডটি করিয়েছে- এটাও কেউ উড়িয়ে দিচ্ছেনা। এটাও সত্য, বর্বরোচিত ঘটনার মূল নায়ক বা গডফাদাররা রয়ে গেছে এখনো নিরাপদে। হত্যার ব্যাপারে শহীদ আলী উল্লাহ আলোর পিতা মোঃ আবদুল্লাহ কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন- আলো হত্যাকান্ডের এক বছর পূর্ণ হলেও হত্যাকান্ডটির মূল হুকুম দাতারা রয়েছে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আসল খুনিদের রক্ষার্থে ভাড়াটিয়া খুনীদের দিয়ে চার্জসীট দেয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং পরিকল্পিতভাবে আমার পুত্রকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। হুকুমদাতারা প্রকাশ্যভাবে ঘুরা ফেরা করলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সত্ত্বেও চার্জসীটে অন্তর্ভূক্তি করা হয়নি। আমি আমার নিষ্পাপ শিশুর হত্যার বিচার চাই এবং মূল হোতাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি। আবদুল্লাহ আরো বলেন- হত্যার মুল পরিকল্পনাকারীরা মোবাইলের মাধ্যমে আমাকে নিয়মিতভাবে হত্যার হুমকী দিয়ে যাচ্ছেন। শিশু আলো হত্যা নিয়ে বেশী বাড়াবাড়ি না করার জন্যও বার বার হুমকি প্রদান করে যাচ্ছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে। বাইরের অনেক ভাড়াটিয়া খুনি, সন্ত্রাসীদের এনে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লালন করা হচ্ছে। অথচ তাদেরকে প্রশাসন দেখেও না দেখান ভান করছে। তাদের নামে থানায় ডায়রীও নেয়া হচ্ছেনা। হত্যাকান্ডের সংগে জড়িত ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জন সরাসরি জড়িত থাকার কথা শিকার করেছে। কিন্ত রহস্যজনকভাবে ঘটনার মূল নায়কদের রিরুদ্ধে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে না পারার বিষয়টি টেকনাফের সাধারন জনগন সন্দেহের চোখে দেখছে। এলাকাবাসী বলেন- পুলিশ পারেনা এমন কোন কাজ নেই। কোন রহস্যজনক কারনে প্রকৃত খুনিদের আড়াল করে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের সৎ ও সাহসের কথা উল্লেখ করেছেন। অবিলম্বে শহীদ আলী উল্লাহ আলোর প্রকৃত খুনীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেয়া হউক। ইতিহাসে এ বর্বরোচিত হত্যাকান্ডে জড়িত সে যতই বড় শক্তিশালী হউক না কেন আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হউক। এ ব্যাপারে গতকাল ৬ সেপ্টেম্বর বিকালে টেকনাফের বহুল আলোচিত শিশু হত্যাকান্ড মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত)স্বপন কুমার মজুমদার বলেন- মামলায় এজাহার নামীয় অভিযুক্ত ৬ জনের নামে চার্জসীট দেয়া হয়েছে। বর্তমানে অভিযুক্ত ৬ জনই জেল হাজতে রয়েছে। কিন্তু মামলার বাদী শিশু আলোর পিতা মোঃ আবদুল্লাহ বলেন- জঘন্যতম ও চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডটি যাদের নির্দেশে এবং যারা ভাড়াটিয়া খুনি এনেছেন চার্জসীটে তাদের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। তাছাড়া উক্ত ঘটনার পরবর্তী ধারাবাহিকভাবে আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। তাদের কেও রহস্যজনক কারনে মামলায় অন্তর্ভূক্ত না করে দলীয় প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে শুধু মাত্র এজাহার নামীয় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জসীট দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞ আদালতে নারাজি দাখিল করা হয়েছে। ###########
Leave a Reply