চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ৬ যুবলীগ নামধারী ক্যাডারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বৃহস্পতিবার দিনভর খুলশী থানা পুলিশ এবং নগর গোয়েন্দা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিছে তাদের গ্রেফতার করে।তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে আছে– একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি এলজি, একটি বন্দুক এবং ৯ রাউন্ড গুলি।গ্রেফতারকৃতরা হলেন- দলনেতা মোহাম্মদ আলী (৪০), শফি (৩২), আলমগীর (৪০), সেলিম (৩৫), আনোয়ার (৩০) ও জামান (৪০)।নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ বলেন, “গত ২ সেপ্টেম্বর খুলশী থানার লালখানবাজার টাংকির পাহাড় এলাকায় সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সেকান্দার হোসেনের বাসায় ডাকাতি হয়। ওই ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ এ ৬ জনকে আটক করেছে।”তিনি আরও বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর আমবাগান রেলওয়ে কলোনির মোহাম্মদ আলীর বাসা থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।”আটক সবাই ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।মোস্তাক আহমেদ বলেন, “রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে গ্রেফতার ব্যক্তিরা লালখান বাজারসহ আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংগঠিত করে আসছিল।”তিনি আরও বলেন, “তাদের ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।”বৃহস্পতিবার গভীর রাতে খুলশী থানায় গ্রেপ্তার থাকা মোহাম্মদ আলী এ ডাকাতির ঘটনার বর্ণনা দেন।মোহাম্মদ আলী নিজেকে সিএনজি অটোরিকশা চালক পরিচয় দিয়ে জানান, ঘটনার দিন ২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার দিকে তিনি নগরীর লালখান বাজারের বাঘঘোনা এলাকায় গ্যারেজে সিএনজি অটোরিকশা জমা দেওয়ার পর আমবাগান এলাকার সন্ত্রাসী আব্দুস শুক্কুরের সঙ্গে তার দেখা হয়। এসময় শুক্কুর ও আরেক সিএনজি অটোরিকশা চালক জামান পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে মোহাম্মদ আলীকে তাদের সঙ্গে যেতে বলেন।
রাত আড়াইটার দিকে তারা ১৩ জন মিলে আমবাগান এলাকার আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী বিল্লালের নেতৃত্বে সাবেক কাউন্সিলর সেকান্দর হোসেনের বাড়িতে প্রবেশ করেন। প্রথমে তারা এলাকার দু’জন নৈশপ্রহরীকে আটকে বেঁধে রাখেন। মোহাম্মদ আলী বাড়ির গেটে দাঁড়িয়েছিলেন।কাউন্সিলরের বাড়িতে ডাকাতির সময় চারদিকে লোকজন এসে তাদের ঘিরে ফেলে। তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় মোহাম্মদ আলী এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়েন। অস্ত্রটি তাকে বিল্লাল দিয়েছিল বলে জানান তিনি।
সন্ত্রাসী বিল্লালের বাহিনী নগরীর লালখান বাজার, আমবাগান, সিআরবি, খুলশীসহ আশপাশের পুরো এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালায় বলে জানান মোহাম্মদ আলী।নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, “বিল্লাল, শুক্কুরসহ যাদের নাম এসেছে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলবে।”পুলিশ সূত্র জানায়, যুবলীগের নাম ভাঙিয়ে বড় কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রুপ নগরীর লালখানবাজারসহ আশপাশের এলাকাকে ক্রাইম জোন বানিয়ে ফেলেছে। চাঁদাবাজি, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন দ্বন্দ্বে প্রায়শ: সেখানে মারামারি-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
Leave a Reply