কক্সবাজারে আবাসিক হোটেল থেকে শুক্রবার বিকেলে উদ্ধার করা নিহত পর্যটকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম হামিম হাসান। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের খলনায়ক ও বিএনপি নেতা রেজাউল করীম আদিলের ছেলে। তারা শহরের ৪২নং চাষাঢ়া এলাকায় বসবাস করেন।হামিম নিজেই তার বাহিনীর নেতৃত্ব দিত। তার বাহিনীর নাম ছিল হামিম বাহিনী।হামিম গত ১৫ জুলাই খুন হওয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শহীদুল আলম মিঠু হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।হামিম নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এক যুবকের অনুগামী ক্যাডার বলে জানা গেছে। শুক্রবার রাতেই তার মৃত্যুর খবর নারায়ণগঞ্জে জানাহানি হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আবদুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, গত ১৫ জুলাই ফতুল্লার জামতলা এলাকায় খুন হওয়া শহীদুল আলম মিঠু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবার দায়ের করা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন হামিম। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হামিম পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানান, হামিম বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সন্ত্রাসী সিজার, ডালিম বাহিনীতে যোগ দেয়। ওই সময়ে তারা শহরের ছোট সারির ক্যাডার বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করতো।
এবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠে হামিম। গড়ে তোলে বিশাল বাহিনী। এ বাহিনীতে ছিল সিজার, ডালিম, সুমন, রবিউল, আশিক সহ আরও অনেকে। তাদের মধ্যে গত বছরের মে মাসে আশিক খুন হয়। ওই খুনের ঘটনায় এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন সিজার। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
শহরের বেশ কয়েকটি বড় ধরনের ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হামিম ও তার বাহিনীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সরকার দলীয় এক প্রভাবশালী যুবকের অনুগামী হওয়ায় বার বার পার পেয়ে যান তিনি।
কক্সবাজারের কলাতলী এলাকায় আবাসিক হোটেল বিএম রিসোর্টের ব্যবস্থাপক নয়ন বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ওই পর্যটক তাদের ১০৫ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। কক্ষটি ভাড়া নেওয়ার সময়ে কটেজের রেজিস্টারে ওই পর্যটকের নাম লেখা হয়েছে হাফিজ (৩৫)। তিনি রাজধানীর ঢাকার ধানমন্ডি ১৩২ নম্বর এলাকার জালাল আহমদের ছেলে বলেও উল্লেখ করা হয়।
তবে শুক্রবার বিকেলে ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় তাকে অনেক ডাকাডাকির পরেও না খোলার কারণে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তার লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার আসল পরিচয় পাওয়া যায়।
কক্সবাজার সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুল বাংলানিউজকে জানান, ওই কক্ষের ভেতরে প্রচুর সিগারেট, তার মুখে রক্ত দেখা গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তিনি মারা গেছেন।
লাশ উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply