ওয়াজ মাহফিলে যারা উসকানিমূলক বক্তব্য দেন তাদের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ভেবে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনে ‘সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে ইসলামিক বিজ্ঞদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি একথা জানান।
সিটিটিসি প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘যে লোকটির ইসলাম সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান রয়েছে সে কখনোই জঙ্গিবাদে জড়ায় না। যাদের ইসলাম সম্পর্কে ভাসা ভাসা জ্ঞান, তারা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। আলেমরা বিভিন্ন সময় বয়ানের মাধ্যমে জনগণকে জঙ্গিবাদ, মাদক সম্পর্কে সচেতন করতে পারেন। জনগণের কাছে ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে, জনগণকে সচেতন করতে আলেম-ওলামাদের ভূমিকা অনেক। জনগণ আলেমদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন। ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা জনগণের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরতেও আলেমরা ভূমিকা রাখছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে আল কায়েদার কোনো অস্তিত্ব নেই, এমনকি কোনো শাখাও নেই। বিভিন্ন সময় নানা অপপ্রচার চালিয়ে অনেকে বাংলাদেশে আল-কায়েদার অস্তিত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।’
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপাতত বাংলাদেশে বড় কোনো ধরনের জঙ্গি হামলার ঝুঁকি নেই। তবে সচেতন থাকতে হবে কেউ যেন নাশকতামূলক কার্যকলাপ চালাতে না পারে। সবাই সবার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করলে জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। জঙ্গিবাদ থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ নিরাপদ। তবে শুধু অভিযানিক ব্যবস্থা জঙ্গিবাদ দমনে যথেষ্ট নয়। এটি প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোই সবচেয়ে বড় বিষয়।’
জঙ্গিবাদ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে বিভেদ রয়েছে বলেও সেমিনারে মন্তব্য করেন মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ যেহেতু একটি আদর্শের বিষয়, যারা জেনে বুঝে রাজনৈতিক মদতে জঙ্গিবাদের দিকে যাচ্ছে তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ সীমিত। যারা না বুঝে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যায় ভুল পথে আদিষ্ট হয়, তারা যদি নিজেদের ভুল বুঝতে পারে তাহলে তাদের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা নেওয়া হবে। কারাগারগুলোতে কাউন্সিলিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
Leave a Reply