ঈদের পরে ডাকা হরতাল একদিন পিছিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এখন ১৩ ও ১৪ আগস্ট টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করবে দলটি।
এর আগে হাইকোর্টে নির্বাচন কমিশনের দেয়া জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধের প্রতিবাদে দলটি ১২ ও ১৩ আগস্ট হরতাল দিয়েছিল।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান হরতালের এই পরিবর্তিত কর্মসূচি ঘোষণা করেন। প্রচার বিভাগের মো. ইব্রাহিম বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারের জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন ও জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার চক্রান্তের প্রতিবাদে জামায়াত ঘোষিত ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার হরতাল কর্মসূচি আগামী ১২ এবং ১৩ আগস্টের পরিবর্তে ১৩ ও ১৪ আগস্ট পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।’
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ক্ষমতাসীন হওয়ার পর জামায়াত নিশ্চিহ্নের অংশ হিসেবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগ মুহূর্তে সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হওয়ার মুহূর্তে জেলগেট থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীদের আবারো গ্রেপ্তার করে সরকার সংবিধান, মানবাধিকার ও ব্যক্তির মৌলিক অধিকার পদদলিত করেছে।’
তিনি বলেন, এ সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর সরকার হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তার অভিযান চালিয়ে তাদের উপর চরম জুলুম করছে। সরকার বেশ কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যানকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করেছে। অতি সম্প্রতি সরকার ৫৫ জন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যকে বরখাস্ত করেছে। এ নিয়ে মোট ৮৬ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হলো। এই ৮৬ জন জনপ্রতিনিধির বির্বদ্ধে সরকার ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করছে।
জামায়াত সেক্রেটারি দাবি করেন, সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা গণআন্দোলন যেন তীব্র রূপ লাভ করতে না পারে এজন্য পরিকল্পিতভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই ধরনের জুলুম, নিপীড়ন চালিয়ে জনগণের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বরং জনগণ এ স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে আরো সোচ্চার হবে এবং এ সরকারের পতন নিশ্চিত করবে। জনগণ সরকারের সকল চক্রান্ত প্রতিহত করবে।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র, জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যার চক্রান্ত ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার সরকারি পরিকল্পনার প্রতিবাদে আমরা ১২ ও ১৩ আগস্ট ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের ছুটির পর মানুষের কর্মস্থলে ফিরে আসার কথা বিবেচনা করে ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার হরতাল কর্মসূচি ১৩ ও ১৪ আগস্ট মঙ্গল ও বুধবার পুনর্নির্ধারণ করা হলো।’
এই হরতাল কর্মসূচি পালন করার জন্য জামায়াত সেক্রেটারি দেশের ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী, আইনবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, শ্রমজীবী, পেশাজীবী সম্প্রদায়সহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
– আরটিএনএন