এম বশর চৌধুরী উখিয়া, কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়া পালং সোনাঘোনা এলাকায় পাহাড় ধ্বসে ৭জন ও পূর্ব ভালুকিয়া তুলাতলী এলাকায় ৩ জন সহ ১০ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ২৬ জুন রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। উখিয়া থানা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন নিহতের লাশ উদ্ধার করে মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। এসব এলাকায় স্বজন হারানোর বেদনায় কান্নার রোল পড়েছে, সর্বত্র নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ২০১১ সালের ১৫ জুন পাহাড় ধ্বসে এ উপজেলায় একই পরিবারের ৫জন সহ ১১ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। একের পর এক পাহাড় ধ্বসে মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উদ্ভিগ্ন হয়েছে মানুষ। অপর দিকে টানা ৫ দিনের প্রবল বর্ষন, সামুদ্রিক জোয়ার ও নাফ নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উখিয়ার ১৫ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার ঘর বাড়ী, ক্ষেত খামার, আমন বীজ তলা, পানের বরজ, মৎস্য ঘের, গ্রামীন রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক প্ল¬াবিত হওয়ায় গতকাল বুধবার সকাল থেকে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। র্দুযোগ কবলিত এলাকার লোকজন নিজেদের সম্পদ ও জান মাল রক্ষা করতে গিয়ে অন্তত ৫০ জন লোক আহত হয়েছে। অসংখ্য গবাদি পশু ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৬ জুন (মঙ্গলবার) সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অবিরাম প্রবল বর্ষণে উখিয়া হলদিয়াপালং ও রতœপালং ইউনিয়নের পাহাড়ী এলাকায় রাত ১১টার দিকে পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সোনাঘোনা এলাকার একই পরিবারে ফরিদ আলম (৩০) তার মাতা ছখিনা খাতুন (৫০) তার মেয়ে ছালেহা মুন্নি (১২) ও ছেলে ইলিয়াছ (৩), পার্শ্ববর্তী পরিবারের আয়েশা বেগম (৩০), পুত্র হেলাল উদ্দিন (৪), খেওয়াছড়ি এলাকায় মোক্তার আহাম্মদের শিশু কন্যা উম্মে সাদিয়া (৩) এবং রতœাপালং ইউনিয়নের পূর্ব ভালুকিয়া তুলাতলী এলাকার একই পরিবারের সোনা আলীর স্ত্রী গোল মেহের (৪২), কন্যা শামশুন নাহার (১৬), রোজিনা আক্তার (১৪) পাহাড় ধ্বসে বসত ঘর বিধ্বস্ত হয়ে মাটি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। স্থানীয় লোকজন গতকাল বুধবার ভোরে খবর পেয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায় এবং সকাল ৯টার দিকে মাটির নিচ থেকে মৃত দেহ গুলো উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় সোনা আলী (৫৫), বদিউল আলম (২৫), ভোলা মিয়া (৪০), শহিদুল ইসলাম (৩০), নাজির হোছন (৪২), আবদুল জব্বার (৫৫), ছখিনা আক্তার (৪), মোক্তার আহাম্মদ (৩০), মুরশিদা বেগম (২৫), মনোয়ারা বেগম (৪) সহ বিভিন্ন এলাকায় অর্ধশতাধিক নারী, শিশু ও পুরুষ আহত হয়েছে। উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট শাহ জালাল চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা, রতœাপালং ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল কবির চৌধুরী, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান দীপক বড়–য়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট শাহ জালাল চৌধুরী জানান, জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনার পাড়া ঘাটঘর, উত্তর সোনার পাড়া, লম্বরী পাড়া, পাইন্যাশিয়া, জালিয়াপালং, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের কোলাল পাড়া, চৌধুরী পাড়া, নাপিত পাড়া, সাবেক রুমখা, পশ্চিম মরিচ্যা, ধুরুমখালী, রতœাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম রতœা, ভালুকিয়া, থিমছড়ি, চাকবৈঠা, গয়ালমারা, করইবনিয়া, রাজাপালং ইউনিয়নের মধুর ছড়া, মাছকারিয়া, খয়রাতি, হরিণমারা, হারাশিয়া, মালভিটা, ঘিলাতলী, খালকাচা পাড়া, কুমার পাড়া, হিন্দু পাড়া এবং পালংখালী ইউনিয়নের পূর্ব বালুখালী, দক্ষিণ বালুখালী, ধামনখালী, রাহমতের বিল, আনজুমান পাড়া, পশ্চিম পালংখালী, তাজনিমারখোলা এলাকায় নিুাঞ্চল প্ল¬াবিত হয়ে অসংখ্য কাচা ঘর বাড়ী ভেঙ্গে গেছে। এসব এলাকার মানুষ অবর্ণনীয় র্দুভাগের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। অনেক মানুষ আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে এবং খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের অভিযোগ এ পর্যন্ত সরকারী বা বেসরকারী কোন পক্ষ থেকে কোন ধরণের সাহায্য সহযোগীতা তারা পায়নি।
এম বশর চৌধুরী,
উখিয়া (কক্সবাজার)
মোবাইল- ০১৮২৬-১৪১৪০৪।
ই-মেইল- রষড়াবঁশযরুধ@মসধরষ.পড়স
Leave a Reply