এক মাস সিয়াম সাধনার পর আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে দেশের মুসলমান সম্প্রদায়।
দেশের কোটি কোটি মুসলমান সারাদেশে অসংখ্য স্থানে ঈদগাহে কিংবা মসজিদে শুক্রবার সকালে ঈদের নামাজ পড়ছেন একসঙ্গে। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টিমুখ করে আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উৎসবের আমেজে ঈদের দিনটি কাটাবেন তারা।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ঈদ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের এই উৎসবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।
দেশের প্রধান ঈদ জামাত হচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে। রাষ্ট্রপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকে সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠেয় এই জামাতে শরিক হচ্ছেন।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৭টা থেকে শুরু হয়ে এক ঘণ্টা অন্তর পাঁচটি ঈদ জামাত হবে।
প্রতিবারের মত এবারো দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতটি হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসঊদের ইমামতিতে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠেয় এই জামাতে অংশ নেবে লাখো মুসল্লি।
বিপুল সংখ্যক মুসল্লির জন্য সঙ্কেত হিসেবে সেখানে নামাজ শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি ও ১ মিনিট আগে ১টি শটগানের গুলি ফোটানো হয়। দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিদের আসার সুবিধার জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
একটি ট্রেন সকাল পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অন্যটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। নামাজ শেষে ট্রেন দুটি পুনরায় দুপুর ১২টায় গন্তব্যে ছেড়ে যাবে।
সরকারি ছুটিতে নগর ছেড়ে চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ী অনেকে প্রতিবারের মতো এবারো সপরিবারে গেছেন গ্রামে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে। এই যাত্রায় অনেক দুর্ভোগও ছিল।
তবে সব দুর্ভোগ মেনে নিয়েই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার খবর শোনার পর উৎসবের রঙ ছড়িয়ে পড়ে দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে।
আকাশ মেঘলা থাকায় রাজধানীতে নতুন চাঁদ কেউ দেখতে পেয়েছেন বলে শোনা যায়নি। তবে সন্ধ্যার পরপরই ঢাকার বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদ দেখার খবর আসতে থাকে।
এরপর ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় ঘোষণা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ায়-মহল্লায় বাজতে থাকে এই উৎসবের অনুষঙ্গ হয়ে ওঠা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই গানটি- ‘ও মন রমজানেরই রোজার শেষে এল খুশির ঈদ’।
এর সঙ্গে সঙ্গে বিদায় নেয় সিয়াম সাধনার মাস রমজান, বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয় উৎসবের প্রস্তুতি।
মধ্যপ্রাচ্যে বুধবার শাওয়ালের চাঁদ দেখা যাওয়ায় বৃহস্পতিবার সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, জর্ডান, মিশর, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় ঈদ উদযাপিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরাও ঈদ করেছেন একই দিনে।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী নেত্রীর শুভেচ্ছা
ঈদুল ফিতরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া আলাদা বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ঈদ সব মানুষের মধ্যে গড়ে তোলে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও ঐক্যের বন্ধন। এদিন ধনী-গরিব, আশরাফ-আতরাফ নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে শামিল হয় এবং ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেয়।
“শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যময় সমাজ গঠনে ঈদ-উল-ফিতরের আবেদন তাই চিরন্তন।”
প্রধানমন্ত্রী জীবনের সর্বক্ষেত্রে ঈদুল ফিতরের শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বাণীতে তিনি বলেন, ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করে সব মানুষকে।
ঈদের দিন শুক্রবার সকালে গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী।
বিরোধীদলীয় নেতা ঈদের শুভেচ্ছা বাণীতে বলেন, “হানাহানি, হিংসা,বিদ্বেষ ও তিক্ততার গ্লানি থেকে মানুষের মনকে এক স্বর্গীয় শান্তি ও সম্প্রীতির চেতনা দান করে ঈদুল ফিতরের উৎসব। তাই আজকের এই উৎসবের দিনে প্রতিটি মুসলমান নর-নারী সৌহার্দ্যরে বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আনন্দকে একত্রে উপভোগ করতে হবে।”
ঈদের দিন সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কূটনীতিক ও বিশিষ্ট জনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ দেশবাসীকে সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ঈদের দিন গুলশান আজাদ মসজিদে নামাজ পড়ার পর সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বনানী কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।
সরকারি কর্মসূচি
ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো ঈদের দিন ধরে কয়েকদিন বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। ঈদ উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যাও ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে।
ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা বিনা টিকিটে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ)-এর আওতাধীন সব শিশুপার্কে ঢুকতে পারবে। তারা বিনা টিকিটে দেখতে পারেবে ঢাকা জাদুঘরও।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগে মহানগরীতে প্রীতি ফুটবল খেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শিশুদের ঈদ পুনর্মিলনি অনুষ্ঠান হবে।
জাতীয় পর্যায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয় পর্যায়ে সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশব্যাপী ঈদের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
রমজানের সিয়াম সাধনার পর উদ্যাপিত হচ্ছে সাম্য, সম্প্রীতি ও সৌহার্দের ঈদুল ফিতর। জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ঈদ জামাতের মধ্যদিয়ে উদ্যাপিত হচ্ছে ঈদ আনন্দ।
ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, কূটনীতিক ও রাজনীতিকসহ সর্বস্তরের নাগরিকরা ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়োজনে ঈদের প্রধান এ জামাতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রায় এক লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবহাওয়া পুরোপুরি অনুকূলে থাকায় উপস্থিতিতে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।
নামাজ ও খুতবা শেষে মোনাজাতে দেশ ও মুসলিম বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধ কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া দেশের সব মানুষের মধ্যে যাতে সম্প্রীতি বজায় থাকে এজন্য সবাইকে ভ্রাতৃত্বে বন্ধনে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরস্পরকে শ্রদ্ধার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে, ঈদগাহ ও এর আশপাশের এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঈদগাহের ভেতরে ও বাইরে সিসি ক্যামরাসহ তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে ডিএমপি। সিসি ক্যামরার মাধ্যমে পুরো এলাকার পর্যবেক্ষণ করা হয়। আর এজন্য পুলিশ ও র্যাকবের দুইটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়।
এর পাশাপাশি পুলিশের মেডিকেল সার্ভিস ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগে একটি মিডিয়া সেন্টার খোলা রাখা হয়।
সকাল থেকেই ময়দানে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে ময়দানে প্রবেশ করতে হয়। প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে। এছাড়া মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, শিক্ষাভবন ও দোয়েল চত্বরের আগেই যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির নামাজ আদায়ের সময় তার নিরাপত্তায় ছিলেন তার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট প্রেসিডেন্ট গার্ডের সদস্য এবং স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সেস (এসএফএফ)। নিরাপত্তা কর্মীরা রাষ্ট্রপতির নামাজের জায়গাটি ঘিরে রাখে।
মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে দেশবাসী ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে। শুক্রবার সকালে কোটি কোটি মুসলমান সারাদেশে অসংখ্য স্থানে ঈদগাহ এবং মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এরপর বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিষ্টিমুখ আর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা এবং নানা উৎসবের মধ্য দিয়ে দিনটি কাটাচ্ছেন তারা।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এডভোকেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ঈদ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সকালে ঈদের নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি তার বাসভবন বঙ্গভবনে দেশের বিশিষ্ট নাগরীক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (চীন মৌত্রি সম্মেলন কেন্দ্র) দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ উৎসব ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সম্মেলন কেন্দ্র এ সময় দীর্ঘ লাইন দিয়ে সাধারণ মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ আনন্দ বিনিময় করেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ সকাল ১০টা থেকে তার বনানীর কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন তিনি।
মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহৎ এ উৎসবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও মিশেল ওবামা, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ, পররাষ্ট্রদপ্তরের সিনিয়র মন্ত্রী ব্যারোনেস ওয়ার্সী এবং ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী রুশানারা আলী এমপিসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ।
দেশের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহে। সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত এই জামাতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেকে নামাজ আদায় করেছেন।
এর আগে সকাল ৭টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি এক ঘণ্টা পর পর এখানে আরো ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এর বাইরে দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। মাওলানা ফরীদউদ্দীন মাসঊদের ইমামতিতে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এই জামাতে অংশ নেন কয়েক লাখ মুসল্লি।
বিপুল সংখ্যক মুসল্লির জন্য সঙ্কেত হিসেবে সেখানে নামাজ শুরুর ৫ মিনিট আগে ৩টি, ৩ মিনিট আগে ২টি ও ১ মিনিট আগে ১টি শটগানের গুলি ফোটানো হয়।
এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লায় অসংখ্য ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এসব জামাতেও দেখা গেছে মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো ঈদের দিন থেকে শুরু করে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়েজন করেছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রদর্শন করা হয় প্রামাণ্য চলচ্চিত্র।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বিনা টিকিটে খুলে দেয়া হয় ঢাকা সিটি করপোরেশনের (উত্তর ও দক্ষিণ) আওতাধীন সব শিশুপার্কগুলো। ঢাকা জাদুঘরও বিনা টিকিটে খুলে দেয়া হয় তাদের জন্য।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগে মহানগরীতে আয়োজন করা হয় প্রীতি ফুটবল ম্যাচের। বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয় শিশুদের ঈদ পুনর্মিলনি অনুষ্ঠান।
জাতীয় এ কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থানীয় পর্যায়ে সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দেশব্যাপী ঈদের অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে।