নিউজিল্যান্ডের সাংবাদিকরা সেই প্রথম দিন থেকে পাল্লেকেলেকে কুইন্সটাউনের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করছেন। পাহাড়ের কোলে মাঠ, চোখ উঁচু করলেই মেঘ, একটু পেস সহায়ক উইকেট; মিল খুঁজলে খোঁজা যেতে পারে। তবে আজ বাংলাদেশকে এই মাঠের সঙ্গে একটা মাঠেরই মিল খুঁজে পেতে হবে—নর্দাম্পটন!
নর্দাম্পটনে সেই ১৯৯৯ সালের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে আজ আবার আরেকটি জয়ের আশায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। কিন্তু ক্রিকেট সমীকরণের এমনই নিষ্ঠুরতা যে, আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে শুধু জয়টাই যথেষ্ট নয়। চলতি আইসিসি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের সুপার এইটে উঠতে হলে আজ রীতিমতো রানরেটে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে জয় পেতে হবে বাংলাদেশকে। এই জটিল সমীকরণ মাথায় নিয়ে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে সাতটায় ও বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ‘ডি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। ম্যাচের আগে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা খুবই আত্মবিশ্বাসী জয়ের ব্যাপারে। বাংলাদেশ বেশ খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই তাদেরও।
বাংলাদেশ আজকের ম্যাচে পিছিয়ে আছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় হারের কারণে। গ্রুপে দুই ম্যাচের পর পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড একটি করে জয় নিয়ে ২ পয়েন্টের করে মালিক। এ অবস্থায় শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ জিতলে তিন দলেরই পয়েন্ট হবে তিন। আর এ কারণেই রানরেটের প্রশ্ন চলে আসছে।
রানরেটের হিসাব বলছে, তিন দলের পয়েন্ট সমান হলেও নিউজিল্যান্ড শ্রেয়তর রানরেটে (+১.১৫০) থাকায়, তারা সুপার এইটে চলে যাবে। শেষ ম্যাচের আগ পর্যন্ত পাকিস্তানও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। দুই দলের রানরেট যথাক্রমে +০.৬৫০ ও -২.৯৫০। মানে বাংলাদেশকে ঘাতটি পুষিয়ে এনে পাকিস্তানকে অতিক্রম করতে হবে।
এক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশকে ঠিক কী ব্যবধানে জিততে হবে, সেটা বলা যাবে প্রথম ইনিংস শেষে। তবে এটা ঠিক যে, আগে ব্যাট করলে অবশ্যই বাংলাদেশকে ৩৭ বা তার চেয়ে বেশি রানে জিততে হবে। পরে ব্যাট করলে লক্ষটা ঠিক কতো ওভারে দাঁড়াবে, সেটা নির্ভর করবে পাকিস্তানের সংগ্রহ ও উইকেট পতনের হারের ওপর। তবে পাকিস্তান যে রানই সংগ্রহ করুন, বাস্তবতা হল, বাংলাদেশকে সেই রান ১৫ ওভারের নিচে কোনো এক সময়ের মধ্যে টপকে যেতে হবে।
যদিও অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বলছেন, তিনি বিশ্বাস করেন তার দলের এরকম জটিল লক্ষ্য নিয়ে ম্যাচ জেতার ক্ষমতা আছে। এবং সে লক্ষ্যে যা করতে হবে সবই করার জন্য প্রস্তুত তারা।
উল্টোদিকে নিজেদের প্রস্তুত বলে দাবি করছেন মোহাম্মদ হাফিজও। পাকিস্তান অধিনায়ক বাংলাদেশকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নিলেও তার বিশ্বাস, এই ম্যাচে জয় নিয়েই সুপার এইট নিশ্চিত করবেন তারা। হাফিজ না বললেও পাকিস্তান দল মনে মনে কলম্বো যাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। এখন দেখার বিষয় কলম্বো কে যায়- বাংলাদেশ, না পাকিস্তান?
Leave a Reply